আমাদের দেশে কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।এটি একটি নীরব ঘাতক রোগ। প্রতিবছর এই রোগে অনেক লোক মারা যাচ্ছে। এ ধরনের রোগের চিকিৎসা একটু ব্যয়বহুল। তাই এই রোগ হলে ভাষা বোঝার আগেই তার প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে হবে।
আমাদের শরীরে দুটি কিডনি থাকে যা শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষা করে এবং বিভিন্ন দূষিত পদার্থ ছেঁকে ফেলে দেয় । এই কিডনি শরীলে কাজ করলে আমরা নানাবিধ সমস্যায় পড়ি। তখন আমরা মনে করি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে।
তাই যেসব খাবার খেলে আমাদের কিডনিতে সমস্যা হতে পারে সেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
তাই আসুন জেনে নেই যেসব খবর সমূহ কিডনি ভালো রাখতে সমস্যা করে ।
১. দৈনিক কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি বা তরল খাবার খাওয়া উচিত। শরীলে অতিরিক্ত ঘাম হলে আরো পরিমান পানি করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেলে কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক থাকে এবং পাথর হয় না। ....
২. খাবারে কাঁচা লবন খাওয়া পরিহার করেন। আমাদের শরীরে প্রতিদিন মাত্র ১ চা চামচ লবণের চাহিদা থাকে। তাই অতিরিক্ত লবন খাওয়া বন্ধ করেন।
২. বেশি চর্বি জাতীয় মাংস যেমনঃ গরুর মাংস, শুকরের মাংস ইত্যাদি খেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এবং ফাস্টফুড, চিপস,প্রক্রিয়াজাত খাবার, ইন্সট্যান্ট নুডলস ও লবণ দিয়ে ভাজা বাদামও কিডনির জন্য বেশ ক্ষতিকর।
৩. খাবারে অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন প্রোটিন থাকলে কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে ফলে কিডনির দুর্বল কোষগুলোর ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে। তাই প্রাণিজ প্রোটিন এড়িয়ে মাছ বা ডাল জাতীয় প্রোটিন রাখুন।
৪. রক্তচাপ এর মাত্রা ১৪০/৯০ এর উপরে থাকলে কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে । তাই কিডনি ভালো রাখতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। সবসময় ১৩০/৮০অথবা এর নিচে রাখার চেষ্টা করুন।
৫. কিডনির রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আরো একটি কারণ হলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখা । তাই নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা করে সুগারের পরিমান বেশি থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার বর্জন করুন ।
৬. দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেসব রোগের ঔষুধ খাই, তা স্বাভাবিক ভাবে কিডনির জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ কিডনির জন্য মোটেও ভালো নয়।
৭. আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর দরকার। তবে প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম এর বেশি ভিটামিন সি এর প্রয়োজন নেই। ডাক্তারদের মতে প্রয়োজনের বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রতিদিন ৫০০ মি:গ্রা: বা এর কম ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।
৮. আমাদের মধ্যে অনেকেই পানির বদলে কোমল পানীয় পান করে থাকেন। যা কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৯. মদ্যপান ও ধূমপানের কারণে আস্তে আস্তে কিডনিতে রক্ত চলাচল কমে যায়। যার ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পায়।
কিডনির পরীক্ষা করান
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন অথবা পরিবারের কারও যদি কিডনি সমস্যা থাকে তাহলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যাদের কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত।
লেখক : নেফ্রোলজি বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল
@copy free