চুল পড়া বন্ধ করার উপায়

 বর্তমানে ছেলে মেয়েদের চুলপড়া একটা সাধারন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কথা অনেকের মুখেই শোনা যায় যে চুল পড়ে যাচ্ছে পেকে যাচ্ছে  ঝরে যাচ্ছে বা  মাথা টাক হয়ে যাচ্ছে। চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। 

Hair fall


ক্যারোটিন নামক একটি প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয় চুল।  চুলের রয়েছে ৯৭ ভাগ প্রোটিন এবং তিন ভাগ পানি। চুল একটি মৃত কোষ , কারণ চুলের কোন অনুভূতিশীল কোষ নেই। চুল  সাধারণত দুই মাসে এক ইঞ্চি বৃদ্ধি পায়। শীতকালের তুলনায় গৃষ্মকালে চুল দ্রুত বড় হয়। 

ডাক্তারদের মতে , সাধারণত খুশকি ,দুশ্চিন্তা,  বা ,চুলের বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে চুল পড়ে থাকে। 

চুল পড়ার লক্ষণ :  

একজন সুস্থ মানুষের মাথায় সাধারণত  এক থেকে দেড় লাখ চুল থাকে।  প্রতিদিন 100 থেকে দেড়শ চুল পড়া স্বাভাবিক।  তবে এর থেকে বেশি পড়লে সেটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  মাথায় হাত দিয়ে চুল টান দিলে যদি চারভাগের একভাগ চুল উঠে আসে তাহলে এটা বেশ চিন্তার কারণ। 


চুল পড়ার কারণ :

 ১. মানুষের দেহে একটি হরমোন আছে যার নাম অ্যান্ড্রোজেনিক।  এই হরমোনের কারণে মানুষের চুল পড়ে।   নারীর তুলনায় পুরুষের দেহে এই হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকে।  যাদের এই হরমোন বেশি তাদের  চুল পড়ে বেশি। 
২. চুল পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে খুশকি।  অনেকেই এই কারণে  খুশকিনাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করেন।  খুশকিনাশক ওষুধে অনেকেই খেয়ে থাকেন।  খুশকি কমে গেলে সাধারণত চুল পড়া কমে যায়। 
৩.শরীরে পুষ্টি জনিত কারণেও  চুল পড়ে।  আমাদের খাবার তালিকায় শর্করা আমিষ চর্বি ও পর্যাপ্ত ভিটামিন না থাকার কারণে চুল পড়ে।  এসব ভিটামিনের কোন একটি দীর্ঘদিন না থাকলেও চুল পড়ে।
৪.  চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে দুশ্চিন্তা।  যারা দুশ্চিন্তা করে তাদের স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি চুল পড়ে।  কিন্তু এই চুলপড়ার সাময়িক সময়ের জন্য পরে আবার ঠিক হয়ে যায়।  দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকলে এবং এটা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে মাথার চুল অনেক বেশি পরিমাণে ঝরে যেতে পারে। 
৫.হরমোনের তারতম্যের কারণে চুল পড়ে।  শরীরে থাইরয়েড হরমোনের কম বেশি হলে কি সমস্যা হয়।  গর্ভাবস্থা বাদ সন্তান জন্মদানের পর এই হরমোনের তারতম্য দেখা যায়।  এবং এই অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় কি এতে প্রায় এক বছর সময় লাগে। 
৬.ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি দেওয়ার পর মাথার চুল একেবারে উঠে যায়।  প্রথম তারাবীতে চুল পড়া শুরু করে এবং শেষ থেরাপি দেওয়ার তিন-চার মাস পর আবার চুলকাতে শুরু করে। 
৭.চুলে বিশেষ কোনো ধরনের স্টাইল করার কারণে বা চুল টাইট করে বাধা কারণেও চুল পড়তে পারে। 

 ৮.অসুখ জনিত কারণে চুল পড়া : জন্ডিস ,টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া ও ডায়াবেটিস জনিত কারণে চুল পড়তে পারে। 

 এছাড়া কোন কোন ওষুধের সাথে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চুল পড়ে।  বংশগত কারণেও মাথা টাক হয়ে যেতে পারে। 

 চুল পড়া রোধে করণীয় : 

 *  পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার এবং নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করতে হবে। 

 *  চুল পরিষ্কার এবং খুশকি মুক্ত রাখতে হবে। 

 *  দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে হবে। 

 *  ঘুমের কোয়ালিটি ভালো রাখতে হবে। 

 *  চুলে কৃত্রিম রং ব্যবহার করা যাবে না।  বয়স বাড়ার সাথে চুলের রং পরিবর্তন হয় এটা মেনে নিতে হবে.

 *  বিশেষ কোন রাসায়নিক পদ্ধতিতে কোকড়ানো চুল সোজা করার চেষ্টা করবেন না। 

  *  একাধিক শ্যাম্পু ব্যবহার না করে এক ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। 

  *  যেসব ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চুল পড়তে পারে সেসব ওষুধ ব্যবহারে সর্তকতা অবলম্বন করুন। 

  চুল পড়া রোধে চিকিৎসা :  চুল পড়ার চিকিৎসা কিছুটা উন্নতি হলেও একেবারে চুল পড়া বন্ধ করা সম্ভব না। 

  ২ থেকে ৩  শতাংশ চুলে মিনস্কিডিল ব্যবহার করে চুল পড়া রোধ করা যায়।  বর্তমানে চুল প্রতিস্থাপন করা হয় তবে        এটা  অনেক ব্যয়বহুল


Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post